World Technology

তরুণরা গড়বে নতুন দেশ ডিজিটাল হবে বাংলাদেশ
Responsive Ads Here

Wednesday 14 December 2016

বাঙ্গালী হয়েও আমরা বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাচ্ছি আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোকে


খাবার খেতে কে না ভালোবাসে,আর সেখানে পিঠা হলে তো কথাই নেই।
 কবি সুফিয়া কামালের ভাষায় -
"পৌষ পার্বনে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে
আরও উল্লাস বেড়েছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে"

একটি লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই বহিঃপ্রকাশ ঐতিহ্য।আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পিঠা।
কতোজন মানুষ আর ধরে রাখে বাংলার ঐতিহ্যকে?
না আপনি;আর না আমি।আমাদের তো বিদেশী খাবার বা জাঙ্ক ফুড অর্থাৎ ফাষ্টফুড টানে বেশি,আর আমরা সেগুলো নিয়েই মশগুল।
যেখানে যাইনাকেনো ফাষ্টফুড দোকান ই চোখে পড়ে, কয়টা আছে আর দেশী খাবারের দোকান?
বাঙ্গালী বর্তমানে বিদেশী খাবারের পাগল।দেখেনা সেই খাবারের ভালো মন্দ দিকগুলো।বিদেশী খাবার যে স্বাস্হ্যের ক্ষতি করে তা আর বোঝেনা।
যেমন বলা যায়,
ফাষ্টফুড গুলোর কারনে মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়েছে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা।
দেহের কোলেষ্টেরল বাড়িয়ে সৃষ্টি হচ্ছে হৃদরোগ।
অতিরিক্ত ওজনের সমস্যাও তৈরি করছে।
কিন্তু হায়রে বাঙ্গাল তবুও বোঝেনা।
আপনারা ভাবছেন এরকি কোনো ভালো দিকনেই?
কে বলছে নেই আছেতো;কেনো এই খাবারগুলো আপনার আমার খাবারের শখ পূরন করছে।তাই নয়কি?
অপরদিকে দেখা যায় আমাদের দেশী খাবারগুলোর প্রতি আমাদের দেশী মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।
আরে ঐতিহ্যবাহী খাবার গুলোই তো মানুষের পারস্পারিক সম্পর্কের বন্ধনকে দৃঢ় করে তুলছে।অন্য সভ্যতাকে জানতে সহায়তা করছে।
আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো ধরে রাখার দায়িত্ব তো আমাদেরই।
বিদেশী খাবার খাওয়া দোষের কিছু নয়।কিন্তু তা অভ্যাসে পরিনত হওয়া ঠিক না।যখন আপনি বা আমি বিদেশে যাবো তখন তাদের খাদ্যই তো আমাদের খেতে হবে।
তাই আমারা সেই খাবারগুলো খাবো কিন্তু পরিমান অনুযায়ী। কয়েকটি উল্লখযোগ্য পিঠার মধ্যে রয়েছে -

নোয়াখালীর জামাই পিঠা

যশোরের সেমাই পিঠা

সিলেটের চুঙ্গিপিঠা বা চুঙ্গা পিঠা


ঢাকার ভাপা কুলী পিঠা


খুলনার চিতই পনিরের পিঠা


রাজশাহীর কালাই রুটি


যা আজ বিলুপ্তির পথে।

আমরা কি পারিনা এসবকে ধরে রাখতে?
আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে উদ্যোগ আমাদেরকেই নিতে হবে।
আমাদের গ্রাম বাংলায় পিঠাপুলির যে উৎসব হয়ে থাকে তা শুধু গ্রাম অঞ্চলে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন অঞ্চলে ক্যাম্পেইন ও প্রচারনার মাধ্যমে সবার কাছে এই ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোকে পৌছে দিতে পারি।
বাংলাদেশে সচরাচর চাইনিজ রেষ্টুরেন্ট চোখে পড়লেও, পিঠাপুলির কোনো রেষ্টুরেন্ট চোখে পড়েনা।
এই ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা রেষ্টুরেন্ট দিতে পারি।যাতে শুধু আমাদের দেশ নয় বিদেশের মানুষের কাছে তা পরিচিতি লাভ করতে পারে।
পৌষ পার্বন, পহেলা বৌশাখ এই দিনগুলোতে আমরা পিঠা উৎসব আয়োজন করতে পারি। যাতে নতুন প্রজন্ম এসব বিলুপ্তপ্রায় পিঠার সাথে পরিচিতি লাভ করতে পারে।
এছাড়াও আমরা "গণমাধ্যম" যেমন - টেলিভিশন, রেডিও, ব্যানারে রেসিপি প্রকাশের মাধ্যমে এই খাবারগুলোকে সবার কাছে পৌছে দিতে পারি।

শুধু পিঠা-পুলি নয় পাশাপাশি অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোকে ;যেমন -

*সিলেটের সাতকরা দিয়ে মাংস রান্না
*নাটোরের কাচাগোল্লা
*জয়পুহাটের আলুর ডাল
*সিরাজগঞ্জের পিটুলি,পানিতোয়া
*ঢাকার বাকরখানি
*চট্রগ্রামের শুটকি
*জামালপুরের ছানার পোলাও
*কুষ্টিয়ার তিলের খাজা
আমরা সবার কাছে পৌছে দিতে পারি।
অন্যান্য দেশের লোকেরা চেষ্টা করে নিজের সভ্যতাকে ধরে রাখতে।
আর আমাদের যেনো টনক নড়েনা।
আমরা কি এতোটুকুও পারিনা?
আমাদের দেশের ঐতিহ্য আমাদের ওপরই নির্ভরশীল। ঐতিহ্যকে ধরে রাখলে আন্তরিকতাটাও বজায় থাকবে।
আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গৌরব।
আমরা যদি এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে না পারি তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তা দেখতে পাবে জাদুঘরে।
তখন এই ঐতিহ্যের কথা মনে হলে মনে পড়ে যাবে মান্না দে-র বিখ্যাত সেই গানের কথা, আর ঠোঁট মিলিয়ে গাইতে ইচ্ছে করবে ----
"পৌষে কাছাকাছি রোদ মাখা সেই দিন ফিরে আর আসবে কি কখনো? "
আমাদের এই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে জাদুঘরে সাজানোর আগে ফিরিয়ে আনতে হবে জনসম্মুখে।


Recommended Article :

  কেন বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাচ্ছি আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোকে 
Eating (also known as consuming) is the ingestion of food, typically to provide a heterotrophic organism with energy and to allow for growth. Animals and other ...

Image result for eating

No comments:

Post a Comment

Thank You for your Structural Comment||