World Technology

তরুণরা গড়বে নতুন দেশ ডিজিটাল হবে বাংলাদেশ
Responsive Ads Here

Thursday 17 May 2018

"আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না" পর্ব নংঃ ৫

"আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না"
পর্ব নংঃ ৫


.
আর বেশিক্ষন দেরি না করে বাসার দিকে
রওনা দিলাম।
.
ওদের বাসাই ঢুকে মোবাইলটা পকেট থেকে
বের করে ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে
টয়লেটে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে
এসেই দেখি আন্টি খাবার টেবিলে বেড়ে
রেখেছে। খুব তাড়াহুড়া করে খেতে
লাগলাম। কারন, মাস শেষের দিকে স্যার
কবে না কবে এসে হিসাব চেয়ে বসে। আমার
এমন তাড়াহুড়া দেখে মেয়েটা রুমের থেকে
ইশারা দিচ্ছিলো যেনো আস্তে খাই। আমি
কনো মতো খেয়ে, আন্টিকে বলেই ওকে
ইশারা দিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা
দিলাম।
.
অফিসে এসে কিছুক্ষন কাজ করার পর খেয়াল
করলাম পেন্টের পকেটে মোবাইলটা নাই।
পরে মনে পরলো নাদিয়াদের ডাইনিং
টেবিলে যে রেখছিলাম তাড়াহুড়ার কারনে
উঠাতে মন ছিলো না। তারপর অফিসের ফোন
দিয়ে আমার নাম্বারটাতে ফোন দিলাম।
ফোন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফোনটা রিসিভ
করে বল্লো, হেলো!
কন্ঠটা নাদিয়ার ছিলো। তাই ওকে বলে
উঠলাম, আমি ফায়সাল।
"তাড়াহুড়া করেতো মোবাইলাটা ফেলে
রেখে চলে গেছো।
"হুম। তোমার কাছে রাখো রাতে এসে নিয়ে
যাবো।
"মোবাইলের পাসওয়ার্ডটা কি দেওয়া যাবে?
"লাভ ইউ।
"এতো দিন পর বল্লা?
"কি?
"এই যে আমাকে ভালোবাসো।
"আরে পাসওয়ার্ডটা হচ্ছে লাভ ইউ।
"ওহ!
"তুমি কি ভাবছো?
"কিছুনা রাখি।
"ওই শোনো।
"কি?
"আই লাভ ইউ।
"এইটা কি? ফেসবুকের পাসওয়ার্ড?
"নাহ আমাদের দুইজনের পাসওয়ার্ড।
"মনোযোগ দিয়া কাজ করো এখন রাখি।
"তুমি কিছু বলবা না?
"আমিও ভালবাসি। হইছে?
"হুম।
"রাখলাম।
"ওকে।
এই বলে ফোনটা রেখে দিলাম।
.
রাতে বাসায় পৌছাতে পৌছাতে প্রায়
সাতটা বেজে গেছিলো। সরাসরি
নাদিয়াদের বাসায় চলে গেলাম। মোবাইলটা
আর চাবিটা আনতে।
.
চাবিটা আন্টির কাছ থেকে নিয়ে নাদিয়ার
রুমে গেলাম মোবাইলটা আনতে।
.
ওর রুমে ঢুকেই দেখি মেয়েটা মাথা নিচু করে
বসে আছে। আমি ওকে বলে উঠলাম, কি হইছে
তোমার?
আমার কথাটা শুনেই মেয়েটা মাথাটা উচু
করে তাকালো। ওর দিকে তাকাতেই
দেখলাম মেয়েটার চোখ দুইটা লাল হয়ে
আছে। আর চোখ দিয়ে পানি পরতেছে।
এরকম দৃশ্য দেখে ওকে আবার বলে উঠলাম কি
হইছে বলবা তো?
"কেন দুই নৌকাই পাড়া দিতে চাইছিলেন?
"মানে কি?
"ওহ এখনতো কিছু বুঝবেন না। লিমাকে?
"লিমা আমার মামাতো বোন।
"মামাতো বোন ছিলো! কিন্তু সামনে সে
আপনার বউ হবে।
"মানে এসব কি বলতেছো?
" আমি কি বলবো সবতো ওই মেয়েই বলছে।
আজ মোবাইলটা বাসায় না ফেলে যেলে, না
জানি কত দিন এরকম মিথ্যা চক্রজালে
আমাকে মাতিয়ে রাখতেন।
" দেখো উল্টা পাল্টা কিছু বলবানা। অনেক
হইছে।
"কি অনেক হইছে! হুম! কেন আপনি দুই নৌকায়
পাড়া দিতে চাইছিলেন? এতো দিন কেন
আপনি আমার সাথে অভিনয় করলেন? কারো
মন ভাঙ্গলে যে কতটা কষ্ট হয় সেটাকি
বুঝেন? আর আমিই কত বোকা আপনাকে
অন্ধের মতো বিশ্বাস করে ফেলছি। আমার
মতো একটা অচল পঙ্গুকে কেইবা ভালবাসতে
যাবে।
যান আমার চোখের সামনে থেকে যান। না
হলে কিন্তু অনেক খারাপ হয়ে যাবে।
কথাটা বলেই মেয়েটা কান্না করতে
লাগলো।
.
আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। মাথাটা
যেনো কেমন ঘুরপাক খাচ্ছিলো। মেয়েটা
লাষ্টে এটা কি বল্লো, অচল পঙ্গু! আর লিমা
ওকে ফোন দিয়ে এসব কি বল্লো! তার মানে
মামি এর জন্যই আমাকে এতো আদর যত্ন
করলো। আমি আর ওর সামনে দাঁড়িয়ে না
থেকে মোনাইলটা ওর বিছানা থেকে নিয়ে
ওর রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।
.
বাহিরে বের হয়ে দেখি আন্টি দাঁড়িয়ে
রইছে। আমাকে দেখেই বল্লো, এরকমটা করার
কি দরকার ছিলো? তুমি জানতেনা ওর বাম
হাত নেই? এদের কষ্টটা কত গভীর হয় তুমি
বুঝো?
"বিশ্বাস করেন আন্টি আমি ওর হাতের দিকে
তেমন করে কখনো খেয়াল করি নি। আর
আমার মামাতো বোন ওকে কেন এগুলো বলছে
তা আমি দেখতেছি।
"..................
"আন্টি ওর হাতের কি হইছিলো?
"এক্সিডেন্ট করছিলো বাসের সাথে।
যেইদিন ওর ইন্টারমিডিয়েট এর রেজাল্ট
দেই। হসপিটাল থেকে বলছে হাতের কনুই
পর্যন্ত নাকি ফেলে দিতে হবে। নাহলে
নাকি পরবর্তিতে ইনফেকশন হলে সমস্যা হবে।
তারপর আর কি করার! হাত ফেলে দিলো
আমার মেয়েটার। কতটা দিন যে, আমার
মেয়েটা পাগলের মতো কেঁদেছে তা
তোমাকে বলে বুঝাতে পারবোনা। ওর এরকম
কষ্ট দেখে ওর বাবা ওকে বাহিরে নিয়ে
যেয়ে এই প্লাস্টিকের হাতটা ওর জন্য
বাধিয়ে নিয়ে এসেছে।
.
কথাটা শেষ করেই আন্টি নাদিয়ার রুমে চলে
গেলো। আমি এখন কি করবো কিছুই বুঝতে
পারছিলাম না। আমি আর কিছু না ভেবেই
ওদের বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
.
.
আমার রুমে এসেই লিমাকে ফোন করলাম। ফোন দিয়েই ওকে জিজ্ঞাস করলাম আমার নাম্বারে ফোন দিয়ে নাদিয়াকে ও কি বলেছে। মেয়েটা নির্দিধায় বলে উঠলো আমার আর ওর নাকি বিয়ের কথা। ওর মুখে এমন কথা শুনে ইচ্ছা মতো ঝারলাম।
.
তারপর ফোন কেটে মাকে ফোন দিলাম। ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই মা রিসিভ করে বলে উঠলো, কিরে কেমন আছিস?
"ভালোই। এগুলা আমাকে না জানায়া তোমরা কি শুরু করলা?
"কই কি করলাম আবার!
"আমার সাথে লিমার বিয়ে ঠিক করছো একবার আমাকে জানাইছো?
"আরে! তোর মামী সেই দিন কথায় কথায় উঠাইছে। লিমাকে চিনা পরিচিত ভালো কারো হাতে তুলে দিতে পারলে নাকি ওর চিন্তাটা কমতো। আমিও মজা করে বলছি,তর সাথে বিয়া করাবে নাকি? ও বলে তাহলেতো ভালো হবে। ঘরের মেয়ে ঘরেই থাকবে। 
"হাইরে! তুমি তোমার ভাইয়ের বউরে এখনো ভালো কইরা চিনলা না! চারটা মাস যে, তাদের বাসায় বেকার বসে ছিলাম, তখনতো আমাকে এখনকার মত বাবা,ধন বলে বড় মাছের মাথা খাওয়াই নাই। লিমাকে ডাকলে বলতো, ও পড়তেছে। এখন উনার মেয়ে মাস খানিক যাবৎ আমাকে ফোন দিয়া কুহারার আলাপ সালাপ পারে। ভালো একটা চাকরী পাইছি বলে মেয়েকে আমার কাধে ঝুলিয়ে দিতে চাই তাই না!
"আরে তুই এমন রাগ করতাছিস কেন? যাহ! ওকে তর বিয়ে করতে হবেনা। 
"শুধু ওকে না। আমার জন্য তোমাকে কোনো মেয়েই দেখতে হবে না। 
"কেন? তোর পছন্দের কেউ আছে নাকি?
"হুম আছে। 
চলবে................................................

No comments:

Post a Comment

Thank You for your Structural Comment||